সরিষার জাব পোকা দমন:
পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা উভয়ই সরিষার পাতা, কান্ড, ফুল ও ফল হতে রস শোষণ করে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে ফুল ও ফলের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং পাতা কুঁকড়ে যায়। জাব পোকা এক ধরনের রস নিঃসরণ করে, ফলে তাতে সুটিমোল্ড ছত্রাক জন্মে এবং আক্রান্ত অংশ কালো দেখায়। এজন্য ফল ঠিকমত বাড়তে পারে না, বীজ আকারে ছোট হয়। বীজে তেলের পরিমাণ কমে যায় । ফল ধারণ অবস্থায় বা তার পূর্বে আক্রমণ হলে এবং প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রগণ না করলে সর্ম্পূণ ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে ।
প্রতিকার
সরিষার আগাম চাষ আশ্বিনের শেষ ভাগ ও মধ্য-কার্তিক অর্থাৎ আগাম সরিষা বপন করলে জাব পোকার আক্রমণের আশংকা কম থাকে।
প্রতি গাছে ৫০টির বেশি পোকা থাকলে ম্যালাথিয়ন গ্রুপের যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে বিকালে ষ্প্রে করুন।
সরিষার পাতা ঝলসানো রোগ দমন:
অলটারনারিয়া ব্রাসিসি নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক অবস্থায় সরিষা গাছের নীচে বয়স্ক পাতায় এ রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। পরর্বতীতে এ ছত্রাকের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড ও ফলে চক্রাকার কালচে দাগের সৃষ্টি হয়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে পাতা ঝলসে যায়। ফলে সরিষার ফলন খুব কমে যায়।
প্রতিকারঃ
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতের সরিষার চাষ করুন। ধলি, দৌলত, বারি সরিষা ৭, বারি সরিষা ৮ এই জাত কিছুটা পাতা ঝলসানো রোগে সহনশীল।
২. রোগমুক্ত বীজ বপন করুন।
৩. বীজ বপনের পূর্বে ভিটাভেক্স ২০০ অথবা ক্যাপ্টন দিয়ে (২-৩ গ্রাম ছক্রাক নাশক / কেজি বীজ) বীজ শোধন করে বপন করুন।
৪. এ রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে রোভরল ৫০ ডব্লিউপি বা ডাইথেন এম ৪৫ , ০.২% হারে (প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম) পানিতে মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করুন।
পরজীবী উদ্ভিদজনিত রোগ দমন:
সরিষার পরজীবী উদ্ভিদের মধ্যে অরোবাংকিই প্রধান ।সরিষা গাছের শিকড়ের সাথে এ পরজীবী উদ্ভিদ সংযোগ স্থাপন করে খাদ্য সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে । এর ফলে পরজীবী আক্রান্ত সরিষার গাছ দুর্বল হয়, বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন হ্রাস পায়। অরোবাংকি এক প্রকার সপুস্পক পরজীবী উদ্ভিদ এবং এর বংশ বৃদ্ধি সরিষা গাছের উপর নির্ভরশীল । এর বীজ মাটিতেই অবস্থান করে। মাটি, ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, সেচের পানি প্রভৃতির মাধ্যমে অরোবাংকির উৎপত্তি ও বিস্তার ঘটে । বারবার একই জমিতে সরিষা পরিবারের ফসল চাষ করলে এ পরজীবীর বিস্তার ঘটে।
প্রতিকার:
ফুল আসার পূর্বে পরজীবী উদ্ভিদ জমি হতে তুলে ধ্বংস করে ফেলুন ।
পরিমিত হারে টিএসপি সার ব্যবহার করুন।
পূর্বে এ রোগে আক্রান্ত জমি গভীরভাবে চাষ করুন ।
অপর্ণা বড়ুয়া
এআইসিও, কৃতসা, ঢাকা অঞ্চল
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS